Tuesday, June 17, 2025
HomeBlogঅনলাইনে ব্যবসা করার জন্য কি কি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হয়?

অনলাইনে ব্যবসা করার জন্য কি কি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হয়?

ইন্টারনেট আমাদের জীবনের সাথে সম্পর্কিত একটি বিশেষ জালের নাম। এই জালকেই আমরা ইন্টারনেট বা অনলাইন নামে চিনে থাকি। সহজ ভাষায় বলত গেলে যেখানে আমরা ভার্সুয়াল ভাবে একে অপরের সাথে সম্পর্ক করতে পারি বা যোগাযোগ করার জন্য যে মাধ্যম ব্যবহার করে থাকি তাকেই অনলাইন বলা হয়।

ইন্টারনেট বা এই অনলাইনের মাধ্যমে বেশ কিছু উপায়ে ভালো পরিমাণে ইনকাম করার উপায় রয়েছে। আর তার মধ্যে জনপ্রিয় একটি উপায় হচ্ছে ই-কমার্স বা ইন্টারনেটে ব্যবসা করা।

আজ আমরা এই পোস্টে ইন্টারনেটে ব্যবসা সম্পর্কিত বিশেষ কিছু গুরুত্বপূর্ন তথ্য নিয়ে আলোচনা করবো। যেখানে এই অনলাইন ব্যবসার সফলতা অথবা ব্যার্থতাকে দ্বায়ী করা হয়।

প্রাথমিক ভাবে অনলাইনে ব্যবসা ২ প্রকারের

প্রাথমিক ভাবে ইন্টারনেট বা অনলাইনে আমরা ২ ধরনের ব্যবসাকে লক্ষ করতে পারি। ১. ফিজিকাল পন্য ২. ভার্সুয়াল বা ডিজিটাল পন্য। তার পরে এই ২ ধরনের ব্যবসার মধ্যে আরো নানান ক্যাটাগরিতে বিভক্ত হতে থাকে।

ফিজিক্যাল পন্য

ফিজিকাল পন্য বলতে সেই সব বস্তুকে বোঝায়, যেগুলো আমরা দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করি, যা দেখা যায়- ধরা যায় এমন কি বাহিক্যতা বা অস্তিত্ব রয়েছে। অর্থাৎ যেগুলো সাধারন বাজারের দোকান থেকে আমরা মাঝে মাঝে প্রয়োজন অনুযায়ী ক্রয় করতে পারি।

ডিজিটাল পন্য

ফিজিকালের বিপরাতে ই রয়েছে ডিজিটাল পন্য। অর্থাৎ যেগুলো আমাদের কাজে লাগতে পারে, তবে সেগুলো সাধারনত ধরা যাচ্ছে না। সেটি শুধু ভার্সুয়াল জগতেই ব্যবহার যোগ্য। যেমনঃ বিভিন্ন সফটওয়্যার, বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ই বুক সহ ইত্যাদি।

পন্য নির্বাচন করা

আপনি যদি অনলাইনে ব্যবসা করতে চান, তাহলে আগে আপনাকে নিদিষ্ট পন্য নির্বাচন করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে ফিজিকাল বা ডিজিটাল যে কোন পন্য নিয়েই কাজ করতে পারেন।

যদি আপনি চান, বিভিন্ন দেশে সেল দিবেন বাংলাদেশে থেকেই বা এক দেশে থেকেই একাধীক দেশে বিক্রি করবেন। তখন খুব সহজেই আপনি ডিজিটাল পন্য নিয়ে কাজ করতে পারেন। কেননা ডিজিটাল পন্যের জন্য আপনাকে ডেলিভারির সমস্যাটা ভোগ করতে হবে না। এক্ষেত্রে বিভিন্ন পন্যের সাবসক্রিবশন বিক্রি করতে পারেন, বা বিভিন্ন সফটওয়্যার বা এই ধরনের ফাইলগুলো বিক্রি করতে পারেন। যা ক্রেতারা টাকা পেমেন্ট করে দিয়েই ডাউনলোড করে নিতে পারবে।

আর যদি আপনি নিজ দেশে থেকেই সেখানে বসে সেল করার চিন্তা করেন বা নিদিষ্ট সিমানায় ব্যবসাকে পরিচালনা করতে চান, তাহলে ফিজিকাল পন্য় নিয়ে কাাজ করতে পারেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ডেলিভারির ঝামেলায় পড়তে হবে।

এবার আপনার সিদ্ধান্ত আপনি কিভাবে বা কি ধরনের পন্য নিয়ে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক।

পন্য কোথায় পাবেন

যেহেতু আপনি কোন একটি পন্য বিক্রি করতে চাচ্ছেন। তাই অবশ্যই আগে আপনার কাছে পন্য থাকতে হবে। এখন আপনি যদি ডিজিটাল পন্য নিয়ে ব্যাবসা করতে চান, তাহলে সেক্ষেত্রে বড় কোম্পানির থেকে শেয়ার নিতে হবে বা তাদের রিসেলার হিসেবে জয়েন করতে পারেন। আরো কয়েকটি মাধ্যমে আপনি ডিজিটাল পোডাক্ট সোর্স পেতে পারেন। আমরা ডিজিটাল পোডাক্ট নিয়ে পরবর্তিতে কখনো আরেকটি পোস্টে সম্পুর্ন আলোচনায় আসবো।

আজ আমরা ফিজিকাল পন্য নিয়ে ভালোভাবে আলোচনা করতে পারি। ফিজিকাল পন্যের পরিচয়টা উপরেই পেয়ে গেছেন। তার পরেও বলতে গেলে, কম্পিউটার-মোবাইল এক্সেসারিস, পোশাক, ঘড়ি, জুতা, খাবারসহ সকল কিছুই রয়েছে এর মধ্যে।

তবে এগুলো অনলাইনে প্রদর্শন করার মাধ্যমে সাধারন মানুষের কাছে সহজেই পৌছানো যায়। আবার বিক্রিও করা সহজ, তবে ক্রেতার হাতে পৌছানোটা অনেক বড় চ্যালেন্জ। কারন আগে আপনাকে পন্যটি কোন উৎপাদন কারী প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রয় করে নিজের গুদামে রেখে নিতে হবে। তার পরে সেটি ভালো মানের একটি প্রমোশোনার ফটো বা ভিডিও তৈরি করতে হবে আর সেটি সমন্ধে একটি ব্লগ লিখে রাখতে হবে।

সকল খরচ হিসেব করার পরে, লাভবান হওয়ার জন্য যে পরিমান অর্থে এটি বিক্রি করা যায় সেই পরিমাণ অর্থ উল্লেখ করে বিজ্ঞাপন তৈরি করতে হবে। ফলে সবার কাছে এটি পৌছাতে শুরু করবে এবং শেষ অবদি কেউ কেউ পছন্দ করে অর্ডার করবে।

অর্ডার করার পরে আবার আপনাকে উক্ত পন্য়টি ক্রেতার হাতে পৌছানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সেক্ষেত্রে অনেকে আগে টাকা দিতে রাজি হলেও কেউ কেউ পরে টাকা দিয়ে রিসিভ করতে চাইবে।

এপর্যায়ে আমরা পন্য় কোথায় পাওয়া যায়, সেটি সমন্ধে কথা বলতে চাচ্ছি। সধারনত পন্য বেশ কয়েকটি মাধ্য়মে সংগ্রহ করা যেতে পারে। তবে ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে হবে বা ভালো ভাবে ব্যবসা করে ভালো পরিমাণে ইনকাম করতে চাইলে নিজেই পন্য স্টোর করার বিকল্প নেই।

নিজে পন্য স্টোর

নিজেই নিজের পন্য স্টোর করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার কেনা দাম সমন্ধে জানতে পারবেন এবং ক্রেতাদের কম দামেই ছেড়ে দিতে পারবেন। আবার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অফার দিতে পারবেন। তার চেয়েও বড় বিষয় হলো, লাভ যেমন বেশি তেমন আবার আপনি আনকমন পন্য নিয়ে কাজ করতে পারবেন।

নিজে পন্য কোথা থেকে কিনবেন, এই প্রশ্নের উত্তর হলো, বিভিন্ন কোম্পানি রয়েছে যাদের মাধ্যমে আপনি আপনার পছন্দের যে কোন পন্য বিশ্বের প্রায় দেশ থেকেই নিয়ে আসতে পারেন। তখন আপনি তাদের টাকা দিয়ে পন্য সমন্ধে জানিয়ে দিতে পারেন এবং সেই পন্য আপনাকে তারা দেখাবে, আপনি কনফর্ম করলে সেটি তারা ক্রয় করে আপনার কাছে পাঠিয়ে দিবে। আপনি রিসিভ করে সেটি আপনার স্টোরে রেখে দিতে পারবেন।

আবার নিজের দেশে বা নিজের অঞ্চলে যে সকল পন্য উৎপন্ন হচ্ছে, সেগুলো উৎপন্নকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেও খুব সহজে নিয়ে আসতে পারেন। তবে অবশ্যই টার্গেট ঠিক রেখে বেশি পন্য নিতে হবে। অল্প নিতে গেলে খরচটা অনেক বেশি পড়তে পারে।

ড্রবশপিং এর মাধ্যমে পন্য

সেলারদের জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হচ্ছে ড্রবশপিং। ড্রবশপিং এর মাধ্য়মে আপনার নিজের কাছে কোন পন্য রাখতে হচ্ছে না। আপনি সেই সকল কোম্পানি থেকে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারেন, যারা এই ড্রবশপিং সার্ভিসটি দিয়ে থাকে।

ড্রবশপিং এর সুবিধা হলো, আপনি শুধু তাদের কাছে নিদিষ্ট ফি দিয়ে একটি সেলার অ্যাকাউন্ট করার মাধ্য়মে তাদের স্টোরে থাকা সকল পন্যের ভিডিও, ইমেজ এবং ব্লগ পোস্ট পেয়ে যাবেন। সেগুলো আপনার ক্রেতাদের সামনে দেখাতে থাকবেন। যখন আপনার ক্রেতারা সেটি পছন্দ করে অর্ডার করবে, তখন আপনি অর্ডারের সকল তথ্য আপনার সেই কোম্পনিকে দিলে, তারা ক্রেতার কাছে পন্যটি আপনার কোম্পানির লোগো এবং নাম দিয়ে পৌছে দিবে।

যদিও প্রসোসটি সহজ। তবে যখন আপনি এভাবে কাজ করবেন, তখন আপনি আসলে পন্যটির শুধু প্রোমোশোোনাল ফটো ভিডিও দেখতে পাচ্ছেন। আবার সঠিক দাম সমন্ধেও জানতে পারতেছেন না। এক্ষেত্রে একই পন্য হয়তোবা অন্য কেউ তুলনা মূলক আপনার থেকে কম দামেই বিক্রি করতেছে। আবার যেহেতু পন্যটি আপনিও সরাসরি কখনো দেখেন নি, তাই ক্রেতা খারাপ বলা বা ভালো বলার কোন কিছুই আপনার উপরে প্রভাব ফেলবে না।

এছাড়াও এভাবে অন্যের ব্য়বসার উপরে নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করা কঠিন। সামান্য সময়ে লাভ হলেও হঠাৎ হারিয়ে যেতে হবে আপনাকে। আর যে সকল ক্রেতারা কোন এক সময় বিভ্রান্ত হয়ে যাবে, তারা আর হয়তোবা কখনোই ফিরে আসবে না।

রিসেলিং করার মাধ্যম

ড্রব শপিং এর মাধ্যমকেও অনেকে রিসেলিং বলে। তবে আবার কখনো কখনো এটি বোঝানো হতে পারে যে, আপনি ব্যবসা করেন, সাথে আবার আমিও ব্যবসা করি। আমিও শীতের কিছু পোশাক নিয়ে কাজ করি, আবার আপনিও কাজ করেন।

আমি জুতা বিক্রি করি, অপর দিকে আপনি মুজা বিক্রি করেন। তখন দেখা যাচ্ছে যদি আমরা পার্টনারশীপে আসি, তখন যাদের কাছে জুতার বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি হচ্ছে, তাদের কাছে মুজা বিজ্ঞাপন ছাড়াই বিক্রি হতে পারে। ফলে বেশি লাভ করা সম্ভব। তখন আমি অর্ডারটি আপনাকে দিয়ে পাঠিয়ে দিলাম, এবং লাভের অংশ উভয়জনেই ভাগ করে নিতে পারি।

এই রিসেলিং মাধ্যমেও অনেকে কাজ করে। তবে এক্ষেত্রে এমন কারো সাথে পার্টনার্শীপ নিতে হবে, যার পন্য সুনাম বয়ে আনতে পারে। কেননা বদনাম হলে, আপনার পন্যের ও বদনাম ছড়াতে থাকবে।

নিজের শপ থেকে পন্য

যদি আপনার বা আপনার আপন কারো কোন শপ থাকে কোন বাজারে। তাহলে আপনি সেখান থেকে খুব ভালোভাবেই অনলাইনে মার্কেটিং করে ভালো পরিমানে সেল করতে পরবেন। কারন এখানে আপনার বেশি চিন্তা করতে হবে না যে পন্য বিক্রি হলো বা হলো না। আর আপনি সঠিক দামেই বিক্রি করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, যেন এমন দামে না পৌছা্য় যেটি সাধারন বাজারের থেকেও বেশি হয়ে যাচ্ছে। কেননা সাধারন বাজার থেকে কিনতে পারলে অনেকেই অনলাইনে কেনা পছন্দ করে না। তার উপরে আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে ডেলিভারি চার্জ মিলে পন্যটি অনেক বেশি দাম পরিনিত হতে পারে।

অনলাইন ব্যবসায় টিকে থাকার চেষ্টা

অনলাইনে ব্যবসা শুরু করাটা অনেক সহজ। তবে সেখানে টিকে থাকাটা অত্যাধীক চ্যালেন্জের। সামান্য ইনভেস্ট করলেই সেখানে শুরু করতে পারেন। কিন্তু বছরের পর বছর টিকে থাকতে আর সেখান থেকে উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে হলে থাকতে হবে সততা।

বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান ও সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে গেছে। হয়তো তাদের কোন ভুল বা তাদের মিথ্যে আশ্রয়ে একটি সময়ে তারা নিজে থেকে না যেতে চাইলেও মানুষ তাদের ভুলে গেছে।

যখন আপনি লোক ঠকিয়ে বেশি ইনকাম করতে চাইবেন। বা মানুষকে একবার ই পন্যটি বিক্রি করতে পারলে খুশি্, মনে করেন সে আর না কিনলেও হবে তখন এভাবে একদিন আপনি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন। কারন প্রতিটি কাস্টমারকে ধরে রাখার সর্বাধীক চেষ্টা আপনার করতে হবে। যখন একটি কাস্টমার আপনার উপরে খুশি থাকবে, তখন সে হয়তো লম্বা সময় পর্যন্ত আপনার থেকে পন্য কিনতে থাকবে, আবার তার মাধ্যমে আরো ১০ জন ক্রেতা আপনার কাছে আসতে পারে।

যখন আপনি নিজের স্টোরে ভালো মানের পন্য রেখে, সগুলো বিক্রি করার চেষ্টা করবেন, তখন হতে পারে, ফটো বা ভিডিও খারাপ হওয়ায় প্রাথমিক ভাবে সামান্য কম বিক্রি হবে, তবে যে পন্যটি কিনে নিবে সে আগামীতে কিনতে আগ্রহী থাকবে।

আর যদিও ওয়েবসাইট, পেজ খুলতে অনেকে ঝামেলা মনে করে, তার পরেও ক্রেতা ধরে রাখার জন্য এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। সেই সাথে প্রোপার সাপোর্ট দিতে পারলে আপনি একজন ক্রেতাকে লম্বা সময় পর্যন্ত ধরে রাখতে পারবেন।

সময়ের সাথে সাথে নিজের শপ, নিজের পন্যকে আপডেট করতে থাকতে হবে। তাহলেই আপনি ভালো পর্যায়ে যেতে পারবেন। অনেক সময়ে লস হলেও নিজের দিকে ভূলে গিয়ে অন্যের কথা মাথায় রেখে সাপোর্ট দিতে হবে। তাহলেই আপনি দীর্ঘ্য সময় পর্যন্ত সুনামের সাথে টিকে থাকতে পারবেন।

arifuldaria1
arifuldaria1https://newmobiledokan.com
বেশ কিছু বছর যাবৎ আমরা বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সাধারন জনগনকে প্রয়োজনীয় তথ্য সমন্ধে জানিয়ে দিতে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ব্লগিং করি। আমাদের কন্টেন্ট মানুষের জন্য উপকারি হবে ভেবেই আমরা কন্টেন্ট তৈরি করি।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments