অতি প্রাচিন একটি পদ্ধতি হচ্ছে ধাতুর উপরে বিনিয়োগ করা। ধাতুর উপরে বিনিয়োগ করলে সর্বদা ভালো পরিমানে ইনকাম করা বা লাভ করা সম্ভব। কারন ধাতুর দাম যদি আমরা বিগত ১০ বছরের মার্কেট কে বিবেচনা করি, তাহলে সেখানে কখনোই কমতে দেখা যায়নি, আংশিক সময়ে নেমে গেলেও আবার পরবর্তি সময়ে সেটি কভার হয়ে উপরে উঠেছে।
আজ আমরা এই ধাতুর বাজার সম্পর্কিত বিশেষ কিছু তথ্য নিয়ে আলোচনা করবো এবং একই সাথে আমরা ধাতব বিনিয়োগের সুবিধা আসুবিধা সম্পর্কে ভালো ভাবে বোঝার চেষ্টা করবো।
ধাতু বলতে কি বোঝায়
বিজ্ঞান ধাতু বলতে সেই সকল মৌলকে বোঝায়, যেগুলো চকচক করে এবং শব্দ করতে পারে। তবে আমরা এই ক্ষেত্রে সকল ধরনের ধাতু সমন্ধে জানতে চাই না। আমরা আজ সেই সকল ধাতু সম্পর্কে জানতে চাই, যেগুলো থেকে আমরা প্রফিট উঠাতে পারবো।
প্রফিটাবল ধাতুর মধ্যে রয়েছে সোনা, রূপা, তামা সহ ইত্যাদি। কিন্তু সাধারনত সোনা এবং রূপার বিনিয়োগ বেশি লক্ষ্য করা যায়। তাই সোনা- রূপার সম্পর্কেই আলোচনায় আসবো। এছাড়াও ভাঙাড়ি ব্যবসায় আমরা তামা, লোহা সহ ইত্যাদি ধাতুর উপরে প্রফিট করতে দেখে থাকি, তারা সময় বুঝে এই ধাতুগুলোকে হোল্ড করে থাকে, ফলে নিদিষ্ট সময়ের পরে আবার যখন দাম উর্ধগতী হয়, তখন ভালো পরিমানে প্রফিট করতে পারে।
ধাতু বিনিয়োগের সুবিধা কি কি
ধাতু তে বিনিয়োগ হচ্ছে, অতি প্রাচীন একটি পদ্ধতী, অনেকে এটাকে ঐতিহ্য হিসেবেও ধরে থাকে। তবে এখানে বিনিয়োগ করলে লস হওয়ার সম্ভবনা নেই, তবে সেক্ষেত্রে লম্বা সময়ে বিনিয়োগ করতে হবে। কেননা বিনিয়োগ মানেই হলো, লম্বা সময় ধরে সেটিকে হোল্ড রাখতে হবে। আর যদি শর্ট টাইম নিয়ে কাজ করে, তখন তাকে আর বিনিয়োগের অংশ হিসেবে ধরা হয় না। তখন তাকে ট্রেডিং হিসেবে ধরা হয়।
সাধারনত ধাতু থেকে ট্রেডিং পদ্ধতিতে প্রফিট করা সম্ভব নয় বললেই চলে। কারন সেখানে দাম খুব কম পরিমাণে ওঠা নামা করে, তবে বছর ঘুরলে তখন তুলনামূলক বেশি দেখা যেতে পারে।
সোনায় যদি বছর-বছর বা লম্বা সময় বিনিয়োগ করে রাখা যায়, তখন সেখান থেকে ভালো পরিমাণে প্রফিট করা সম্বব। ঠিক একই ভাবে রূপার ক্ষেত্রেও যদি লম্বা সময় ধরে বিনিয়োগ করে রাখা যায়, তাহলে সেখানেও লাভবান হওয়া সম্ভব। অল্প সময়ে এই জাতিয় মৌল বা ধাতুতে বিনিয়োগ করলে ভালো প্রফিট হয় না।
বিশেষ যে সুবিধা পাওয়া যায়, তার মধ্যে অন্যতম কিছু সুবিধা হলোঃ
- লস হওয়ার সম্ভবনা নেই
- প্রয়োজনে লম্বা সময় ধরে রাখা যায়
- বাজার বছর বছর উর্ধমূখী
- নিজের কাছেই সংরক্ষিত থাকে
- সকল সময়েই এর বৈধতা থাকে
- পরিমাণে ও কম রাখা যায়
- প্রয়োজন মতো বিক্রি করে দেওয়া যায়
আরো নানান সুবিধা পাওয়া যায় এই সব ধাতুর ক্ষেত্রে। তবে তার সাথে আবার কিছু অসুবিধাও দেখা যায়। তার মাধ্য়ে রয়েছে।
ধাতুতে ববিনিয়োগের কিছু অসুবিধা
নানান মূখী সুবিধার ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু অসুবিধাও আমাদের কাছে থাকে। তার মাধ্যে বেশি অসুবিধা হলো, এটি দাম খুবই কম পরিমাণে ওঠানামা করায় তেমন ভালো প্রফিট করা যায় না। লম্বা সময় ধরে রাখার প্রয়োজন থাকে।
- লম্বা সময়ে ধরে রাখতে হতে পারে
- তুলনা মূলক পুরাতন পদ্ধতি এবং প্রফিটও কম
- ঘরে রাখতে হলে, ভালো স্থানের প্রয়োজন হবে
- চুরি হওয়া, হারিয়ে যাওয়া নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে
- দেশের বাইরে বহন করাটাও সমস্যা যনক হতে পারে
- সঠিক ভাবে পরিমাণ ও পন্যের সমন্ধে প্রয়োজনীয় ধারনা থাকা জরুরি
আরো ইত্যাদি সমস্যা দেখা যেতে পারে। তবে এগুলো থেকে বেরিয়ে আসার ও বেশ কিছু উপায় লক্ষ্য করা যায়। তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে ই সোনা। বা ডিজিটাল সোনা। যেখানে আপনি একটি সংখ্যা দেখতে পাবেন এবং বিনিময়ে আপনার টাকা দিতে হবে, আবার প্রয়োজন মতো, সেই সংখ্যাকে বিক্রি করে টাকা নিয়ে নিতে হবে, এক্ষেত্রে সোনার দাম ওঠা নামার সাথে সাথে আপনার ওই সংখ্যাটির ভেলুটাও কমতে বা বাড়তে থাকে, ফলে সোনা কিনে রাখার মতোই প্রফিট করা যায়।
সোনা বিনিয়োগের মাধ্যম কি কি
সোনা বিনিয়োগের মাধ্যম দুটি হিসেবে ধরে নেওয়া যায়। তার মধ্যে রয়েছে ১. সোনা কিনে রাখা ২. ই সোনা থেকে বিনিয়োগ করে রাখা
সোনা কিনে হোল্ড করার মাধ্যমে প্রফিট
যখন আপনি সাধারন বাজারের থেকে বা সোনার মার্কেট থেকে সোনা কিনে সেটি বিনিয়োগ হিসেবে রেখে দিবেন, সেটি হবে সাধারন ভাবে সোনা বিনিয়োগ করা। যেটি তুলনা মূলক কিছুটা ঝামেলার বলে ধরা হতে পারে। তবে এটিই সেই পুরাতন পদ্ধতি। এভাবেই যুগের পরে যুগ সোনার বিনিয়োগ চলে আসছে। এই মাধ্যমটি ব্যবহার করে নিজের কাছেই সোনা রেখে দিতে পারেন।
ই সোনায় বিনিয়োগ
ই সোনা বলতে সেই মাধ্যমে বোঝায়, যেটি সোনার ই কোন একটি কার্যকরম ইন্টারনেটের সাথে সম্পর্কিত রয়েছে। এক্ষেত্রে এই ধরনের প্লাট ফর্মে আপনি নিদিষ্ট পরিমাণে টাকা পে করার মাধ্যমে সেখান থেকে একটি সংখ্যা কিনতে পারেন, যেটি সোনা হিসেবে গন্য হয় ওই প্লাটফর্মে, এবং সময়ের সাথে সাথে সোনার বাজার মূল্যের সাথে সাথে এই ই সোনা বা ডিজিটাল সোনার দাম ও একই রকম ওঠা নামা করে, ফলে আপনি ক্রয় বা বিক্রয়ের সময়ে প্রফিট বা লস করবেন।
ই সোনা হচ্ছে সোনায় বিনিয়োগের একটি ডিজিটাল মাধ্যম। এই মাধ্যমে সোনায় বিনিয়োগ করলে সহজে বিনিয়োগ করা সম্ভব। এবং বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। সেই সকল সুবিধার মধ্যে অন্যতম রয়েছেঃ
১. এখানে কম টাকার ও বিনিয়োগ করা যায়
২. ক্রয় বিক্রয়ের জন্য বাজারে বা কোথাও যেতে হয় না
৩. লাইভ প্রফিট বা লস দেখা যায়
৪. স্টোরের জন্য বিশেষ স্থানের প্রয়োজন হয় না
৫. হারিয়ে যাওয়া, নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে না
৬. এক দেশ থেকে অন্যদেশে আদান প্রদান করাও সহজ
৭. এভাবে চাইলে ট্রেড করাও সম্ভব
আরো ইত্যাদি সুবিধা রয়েছে এই সোনার ডিজিটাল বিনিয়োগের মাধ্যমে। তবে আবার বেশ কিছু অসুবিধাও থাকতে পারে, তার মধ্যে অন্যতম হলো, এটি যেহেতু ইন্টারনেট কর্তিক স্টোর করা, তাই হ্যাক হয়ে যাওয়া, সার্ভারগত সমস্যা বা আরো নানান সময়ে নানান সমস্যা দেখা যেতে পারে।
সোনা বিনিয়োগের উপযুক্ত মাধ্যম ও সময়
সোনা বিনিয়োগের জন্য আপনাকে উপযুক্ত মাধ্যম খুজে নিতে হবে। সেই সাথে আবার সঠিক সময়ে বিনিয়োগ করতে হবে। আর যখন আপনি টাকা বের করে নিতে চাইবেন, তখন আবার সঠিক সময় খুজে বের করতে হবে।
আসলে আপনি একটি পোস্ট পড়েই সোনার বাজার সম্পর্কে সম্পুর্ন ধারনা পাবেন না। আপনিও যদি সোনার বাজারের একজন দক্ষ্য বিনিয়োগ কারী হতে চান, তখন আপনাকেও এটি সমন্ধে লম্বা সময় নিয়ে রিসার্চ চালিয়ে যেতে হবে। তাহলে ভালো ধারনা পেতে পারেন।
ভালো ধারনা ছাড়া বেশি টাকা বিনিয়োগ না করাই ভালো। তবে শুরুতে শেখার জন্য অল্প পরিমাণে বিনিয়োগ করতে পারেন। যেহেতুু সময় নিয়ে চাইলে ক্ষতি থেকে টাকা বাচাতে পারবেন, তবে প্রফিট পেতে হলে অবশ্যই আগে ভালো ধারনা নিতে হবেই।
যদি আপনার নিজের হাতে সোনা রাখার ইচ্ছে না থাকে, তাহলে আমার মতে ভালো কোন একটি কোম্পানির থেকে ই সোনা নিয়ে বিনিয়োগ করাই ভালো। কেননা সোনা স্টোর করে রাখাটা একটা ঝামেলার বিষয়।
যদি আপনি অল্প পরিমাণে সোনা কোন কোম্পানির মাধ্যমে কিনে নেন, তাহলে সেটি আপনার অ্যাকাউন্টে থাকবে যতদিন না আপনি তা বিক্রি করবেন, একই সাথে সোনার দাম বাড়লে বা কমলে সেখানে আপনার বিনিয়োগের পরিমাণ ও কমে বা বেড়ে যাবে ফলে আপনি সহজে বুঝে নিতে পারবেন এবং সেখান থেকে সহজে প্রফিট হলে বের করতে পারবেন। এটি সাধারনত ৫ মিনিটের মতো সময় নিতে পারে।
সোনার বাজারে যখন সোনার দাম কমে যায়, তখন সোনা কিনে নিতে হবে। আবার যখন সোনার দাম বাড়তে শুরু করবে তখন সোনা বিক্রি করতে হবে। তাহলে আপনি প্রফিট করতে পারবেন। এক্ষেত্রে নিয়মিত সোনার বাজারের দামের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আপনি ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে এই সোনার বাজারের সমন্ধে জানতে পারেন।
সোনার বাজারে বিনিয়োগের সতর্কতা
বিনিয়োগের সকল ক্ষেত্রেই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, না হয় তো আপনি ক্ষতির সম্মুক্ষীন হতে পারেন। তাই আমরা আপনাদের সাথে ধীরে ধীরে আরো অনেক তথ্যের মাধ্যমে আপনাদের সাথে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য শেয়ার করবো।
যহেতু সোনার বাজারে বছরের পরে বছর দাম বেড়েই চলেছে। তাই এখানে ধর্য্য ধরে টিকে থাকলে লস হওয়ার সম্ভবনা খুবই কম। অর্থাৎ দাম বাড়ার পরে বিক্রি করলেই হবে।