বাংবাদেশের বর্তমান সময়ে পুরাতন মোবাইল বেশি কেনার আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়, তবে এর পেছনে বেশ কিছু কারন রয়েছে। তাই আজ আমরা আমাদের এই পোস্টে বাংলাদেশের পুরাতন মোাইল কেনা বেচার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করার চেষ্টা করবো, আর আপনারা এই পোস্টের মাধ্যমে এই পুরাতন মোবাইলের বাজার সমন্ধে বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারবেন আ
আমাদের আজকের টপিকে মূল যে তথ্যগুলো শেয়ার করা হবে তার টেবিল হচ্ছেঃ
- কেন পুরাতন মোবাইলে সবার আগ্রহ
- কি কি সুবিধা থাকে
- কি কি অসুবিধা থাকতে পারে
- নতুন থেকে পুরাতন কেনার কারন কি
- কেন নতুনের তুলনায় অনেক কম দামেই মেলে পুরাতন মোবাইল
- ঘন ঘন মোবাইল পরিবর্তনের বিশেষ কারনগুলো কি কি
কেন পুরাতন মোবাইলের প্রতি বেশি আগ্রহ
সাধারনত আমরা যদি বাজারের দিকে লক্ষ্য করি বা বর্তমান জেনারেশনের দিকে লক্ষ্য করি, তাহলে বেশির ভাগই আমরা পুরাতন মোবাইল কিনে সেটি ব্যবহার করাকে দেখতে পাই। তবে এর পেছনে মূলত বেশ কিছু কারন আছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মানুষের তুলনা মূলক বাজেট কম থাকে, সেই সাথে তারা সকল ফিচার এবং সুবিধা এই অল্প বাজেটের মোবাইলেই ভোগ করতে চায়।
বাংলাদেশের বাজেট বেশিরভাগ ই ৫০ হাজারের আশেপাশে থাকে, তার সাথে তারা চায় ভালো গেমিং পার্ফমেন্স, ভালো প্রসেসর, ভালো সেন্সর, ভালো ক্যামেরা, এআই ফিচার, বেশি রেম, রুম বেশি ইত্যাদি। যা সাধারনত এই বাজেটে পাওয়া অনেক টা কঠিন বলা চলে। সেই স্থান থেকে সবার ই আগ্রহ পুরাতন মোবাইলের দিকে যায়। এতে যেমন বাজেট কম আর কম বাজেটেই সকল স্বপ্ন পূরন করতে পারে, সেই সাথে আবার এটি যেহেতু পুরাতন ভাবেই কিনেছে, তাই বিক্রি করতে চাইলেও তেমন বেশি লস করতে হয় না।
এই বিশেষ কারনগুলোর জন্যই মুলত বাংলাদেশের বাজারে পুরাতন মোবাইলের প্রতি বেশি আগ্রহ দেখা যায়। এটি অল্প দামে পাওয়া যায় যা নতুন কিনতে হলে বেশি টাকা লাগে। আবার প্রয়োজনে অল্প লসেই বিক্রি করা সম্ভব।
পুরাতন মোবাইল কেনার বিশেষ যে সকল সুবিধা পাওয়া যায়
মোবাইলের সুবিধার তো শেষ নেই। তবে আজ আমরা শুধু নতুন আর পুরাতনের বিষয়ে কথা বলতে চলেছি। তাই এই পোস্টে আমরা শুধু পুরাতন মোবাইল কেনার বিশেষ সুবিধা সমূহ নিয়ে আলোচনা করবো।
মূলত পুরাতন মোবাইলের ভ্যাট দিতে হয় না, যেটি বাংলাদেশে নতুন মোবাইলের জন্য অনেক বেশি নির্ধারিত থাকে। তার সাথে যদিও কখনো কখনো কিছু পরিমাণে ভ্যাট দিতে হয়, সেটিও মাত্রা তান্ত্রিক থাকে। এজন্য দামে কম হয়। আবার যখন কোন কোম্পানি একই সিরিজের বিভিন্ন আপডেট ভার্সন রিলিস করে থাকে, তখন সেটি মূলত ব্যাকডেট ভার্সনগুলো বিদেশিরা পরিবর্তন করে ফেলে। সেখানে পুরাতন মোবাইল বিক্রি হওয়ার প্রবণতা কম থাকায়, সেখানের মার্কেটে এটি রাখা হয় না, তাই এই সকল ডিভাইস বাংলাদেশের মতো বিভিন্ন দেশের বাজারে কম দামেই দিয়ে থাকে তারা। যেহেতু বিদেশিরা অল্প সময় ব্যবহার করে, তাই এই ডিভাইস গুলো প্রায় নতুনের মতোই থাকে।
এজন্য এগুলো একটু কমে পাওয়া যায় আর নতুন বলেই মনে হয়। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ডিভাইসগুলো কিনতে আগ্রহী থাকে সবাই। আর যদি বাংলাদেশের কোন ইউজারের এক্সেন্জ করা মোবাইল হয়, তখন সাধারনত সেটির উপরে ভ্যাট কার্যকর হয় না, তাই সেটিও তুলনা মূলক কম দামেই পাওয়া যায়। এই দিকে এই মোবাইলগুলোর বিশেষ সুবিধা ধরা যেতে পারে।
এছাড়াও পুরাতন মোবাইলে বিভিন্ন সুবিধা থাকে, আবার সমস্যা দেখা গেলে সাধারনত নতুন মোবাইল সার্ভিসিং করে দেওয়া হয়, তবে এই ক্ষেত্রে পুরাতন মোবাইল রিপ্লেস করাও সম্ভব।
পুরাতন মোবাইল কেনার বিশেষ অসুবিধা সমূহ
পুরাতন মোবাইল কেনার যেমন আছে অনেক সুবিধা, তেমন অসুবিধার দিকেও কম নয়। তাই আমাদের সকল সুবিধার সাথে অসুবিধাগুলোকেও জেনে নিতে হবে। কারণ এটি আমাদের অনেক বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
বিশেষ ভাবে যে সকল অসুবিধা দেখা যেতে পারে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, যখন মোবাইলের হার্ডওয়্যার জনিত সমস্যা লক্ষ্য করা যায় বা বিভিন্ন সফটওয়্যার জনিত সমস্যা দেখা যায়, তখন এটি বিক্রি করতে আগ্রহ প্রকাশ করে থাকে, এই ধরনের সমস্যা না বুঝে নিলে, সেটি খারাপ পার্ফমেন্স দিতে পারে। আবার কখনো কখনো সেটি একেবারে ব্যাবহারের অনুপোযোগী হয়ে যেতেও পারে।
তাছাড়াও বিভিন্ন সময়ে চুরি করা মোবাইল, বিভিন্ন অপরাধের সাথে সম্পর্কিত মোবাইলকেও বিক্রি করতে চায় তাই সেই সকল মোবাইল গুলো কেনার আগে সেগুলোর সমন্ধে খুব ভালো করে খবর নিয়ে রাখতে হয়। তা নাহলে আবার বিভিন্ন আইনের জটিলতায় পড়তে হতে পারে। সেই বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে। ক্রেতা হিসেবে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সাথে নিতে হবে আর বিক্রেতার ও সকল তথ্যাদি কাছে রাখতে হবে। প্রমাণ রাখতে হবে।
তুলনামূলক নতুন মোবাইল থেকে পুরান মোবাইলে আগ্রহ কেন বেশি
যখন আমরা তুলনায় আসি, তখন মূলত এটি পার্থক্যে পরিনিত হয়ে যায়। আসলে যদি আমরা নতুন আর পুরাতন মোবাইলের ভালো বিষয়ে আলোচনা বা পার্থক্য করতে চাই, তাহলে বিশেষ করে যে সকল বিষয়ের কথা চলে আসে তার মধ্য রয়েছে বাংলাদেশের মানুষের কম বাজেট, বেশি চাহিদা, আবার বিক্রি করার মানসিকতা, পুরোনোটা ব্যাবহার করার এবং বিক্রি করার অভ্যস্ততা, বাংলাদেশের নতুন ডিভাইসের জন্য ভ্যাট বেশি প্রয়োজন হয়, নতুন মোবাইল কিনতে হলে বাজেট ঠিক করে বিভিন্ন শো রুমে ঘুরতে হয় আরো ইত্যাদি বিষয়ের জন্যই আমাদের দেশে মূলত পুরাতন ফোনের দিকে চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
আবার যদি আমরা ভিন্ন দৃষ্টি থেকে দেখতে চাই, তাহলে দেশের সরকার আমাদের মূলত নতুন মোবাইল ব্যবহার করার সুযোগ সুবিধা ভ্যাটের মাধ্যমে বন্ধ করে রাখছে, ফলে অল্প বাজেটে আমাদের ভালো একটি ব্যবহার যোগ্য ডিভাইস নিতে হলে এটিই একটি ভালো চয়েজ হতে পারে।
কোথায় গেলে ভালো মানের পুরাতন মোবাইল পাওয়া যায়
অবশ্যই এটি বাজেটের উপরে নির্ভরশীল হবে। আপনার বাজেট যদি একেবারেই কম হয়, তাহলে নিজের আশেপাশে খুজে নেওয়াই ভালো। আর যদি ২০ হাজার বা তার আশেপাশে হয় বাজেট, তাহলে আপনি ১ হাজার খরচ করে হলেও একটি ভালো বাজারে যেতে পারেন।
বিশেষ করে ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল সহ প্রায় সকল বড় বড় মার্কেটেই আপনি এই ধরনের এক্সেন্জ এর দোকান পেয়ে যাবেন। যদি একটি দূরেও হয় যেখানে আপনার ১ হাজার ভাড়া লাগতে পারে, তবুও সময় করে সেখান থেকে কিনতে যেতে পারেন, ফলে সেটি মূলত আপনার এলাকার লোকাল মার্কেটের তুলনায় বেশি ডিভাইস থেকে পছন্দ করে ভালো টা নেওয়ার সুবিধা পাবেন আর সেটি তুলনা মূলক বেশি দিন ব্যবহার করতেও পারবেন।
বাংলাদেশের সেরা কিছু মোবাইল মার্কেট সমন্ধে জানতে আমাদের লেখা ভিন্ন পোস্টে দেখতে পারেন। তাছাড়াও আপনি অনলাইন থেকে বিভিন্ন সময়ে পুরান মোবাইল কিনতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। সাধারনত ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে পুরাতন মোবাইল বিক্রির জন্য বেশ ভালো জমজমাট দেখা যায়। আর বিশেষ করে নিজের নিরাপত্তা নিজেকেই নিতে হবে সেটি যদি অনলাইন থেকে নেন বা অফলাইনে কোন বাজার থেকে নেন তবুও।